জরুরী নাম্বার সমূহ :

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় শিশুদের হাতে সংসারের হাল


Songbad Times প্রকাশের সময় : মে ২১, ২০২৫, ১০:০২ অপরাহ্ন /
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় শিশুদের হাতে সংসারের হাল

দু’হাতে পানির বালতি। আশপাশে আঁকাবাঁকা ভঙ্গুর পথ। শীর্ণ দেহে ভারী এ বালতিগুলো বইতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু মাত্র ১২ বছর বয়সি মেয়েটি নিষ্ঠুর পৃথিবীর কঠিন বাস্তবতা বুঝে গেছে। পরিবারের পাশে দাঁড়াতে প্রতিনিয়তই সংগ্রাম করে যাচ্ছে জানা মোহাম্মদ। যেই সময়টাতে স্কুল প্রাঙ্গণে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে হেসে খেলে বেড়ানোর কথা সেই বয়সে ধরতে হয়েছে সংসারের হাল। গাজা যুদ্ধে জানার মতো এমন অসংখ্য শিশুর শৈশব ছিনিয়ে নিয়েছে। সোনালি অতীত ফেলে প্রতিদিন তারা সংগ্রাম করছে ক্ষুধা, তৃষ্ণা ও মৃত্যু ভয় নিয়ে। বুধবার সিএনএনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই এক শিশুর জীবনসংগ্রামের গল্প।

গাজার ধ্বংসস্তূপের ভেতর দিয়ে গোলাপি সোয়েটার গায়ে পানির বালতি হাতে জানার পথচলা যেন এক অবিরাম যুদ্ধ। ইসরাইলি স্নাইপারের গুলিতে নিহত হয় তার বড় ভাই। এরপর থেকেই পরিবারের দায়িত্ব তার ঘাড়ে এসে পড়েছে। অসুস্থ বাবা-মাকে বাঁচিয়ে রাখতে জানা প্রতিদিন সংগ্রাম করে খাবার ও পানি জোগাড় করে। গাজায় পানি সংগ্রহের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ১২ বছরের ছোট্ট এই মেয়েটি বলল, ‘আমি চাই না আমার বাবা কষ্ট পাক। তাই আমি শক্ত হয়ে উঠেছি।’ সে আরও বলে, ‘আমার বাবা বৃদ্ধ এবং তার হৃদরোগ আছে। যদি তিনি বালতি বহন করার চেষ্টা করেন, তাহলে তিনি পড়ে যাবেন।’ খাবারের সন্ধানে সারাদিন হন্যে হয়ে এ ছোটাছুটিই এখন জানার প্রতিদিনের রুটিন।

চা-কফি বিক্রি করে পরিবারকে খাওয়াচ্ছে খালেদ: মধ্য গাজা উপত্যকার দেইর আল-বালাহ বাজারের চা-কফি বিক্রি করে খালেদ আবু হাসিরা। ১৩ বছর বয়সি এই বালক ব্যবসা করে এখন পরিবারের ভরণ-পোষণের জোগান দিচ্ছে। ইসরাইলি বিমান হামলায় তার বাবা নিহত হওয়ার পর এখন খালেদই তার পরিবারের শেষ ভরসা। তাঁবুতে ফ্যাকাশে চেহারা নিয়ে খালেদের মা জানান, ‘খালেদের কাজই আমাদের আয়ের একমাত্র উৎস। সে তার বয়সের চেয়ে অনেক বড় হয়ে গেছে। এখন হয়তো সে তার শৈশব কাটাতে পারত, কিন্তু যুদ্ধ আমাদের সবকিছু কেড়ে নিয়েছে’। আরব নিউজ

পরিবারের জন্য রান্না করেন সালাহ: উত্তর গাজার ১২ বছর বয়সী আবদুল্লাহ সালাহ। পরিবারের জন্য খাবার জোগান থেকে শুরু করে রান্নাবান্নাও করে সে। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে তাঁবু পরিষ্কার; তারপর রান্নার জন্য রসদ খুঁজতে বের হয়। পণ্য জোগাড় করে পরিবারের ২০ জন সদস্যদের জন্য রান্না করে সে। দুঃখ প্রকাশ করে সালাহ বলে, ‘কাঠ, গ্যাস, খাবার, ময়দা নেই, এখানে কিছুই নেই। আমরা আশ্রয় কেন্দ্রে আমাদের তাঁবুতে পৌঁছানো পর্যন্ত দীর্ঘ দূরত্ব ধরে পানি ভর্তি বোতল বহন করি’। এপি

এসটি/এমএইচ