সর্বশেষ :

জরুরী নাম্বার সমূহ :

ব্রেকিং নিউজ :

লালমোহন হাসপাতালে নিয়োগই ছিল না, তবুও একাধিক দায়িত্বে মিজান


Songbad Times প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১, ২০২৫, ১০:৫৮ অপরাহ্ন /
লালমোহন হাসপাতালে নিয়োগই ছিল না, তবুও একাধিক দায়িত্বে মিজান

ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ ছাড়াই দীর্ঘদিন একাধিক দায়িত্ব পালন করেছেন মো. মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। ওয়ার্ডবয় পদে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে তার নিয়োগ থাকলেও, ২০১৯ সাল থেকে তিনি বসতেন লালমোহন হাসপাতালেই—আর সেখান থেকেই বেতনও তুলতেন ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিজানুর রহমান লালমোহন উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি তজুমদ্দিনে নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও, লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী, পরিসংখ্যান বিভাগ ও কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করতেন নিয়মিতভাবে। হাসপাতালের টেন্ডার, অর্থনৈতিক কাজ, গোপনীয় দপ্তরের কার্যক্রমসহ বিভিন্ন দায়িত্বও তাকে দিয়েই সম্পন্ন করা হতো।

অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন প্রধান সহকারী মো. নুরুজ্জামানের প্রভাবেই মিজানুর রহমান লালমোহন হাসপাতালে অবস্থান করতেন। নুরুজ্জামান প্রথমে নিজ কক্ষের পাশে মিজানকে বসিয়ে কম্পিউটার কাজ করাতেন। পরবর্তীতে তজুমদ্দিন হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ের ওয়ার্ডবয় পদে তার নিয়োগ দেখিয়ে কাজ করাতে থাকেন লালমোহনেই। হাসপাতালের তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৈয়বুর রহমান এবং প্রধান সহকারী নুরুজ্জামান যৌথভাবে মিজানকে দিয়ে গোপনীয় প্রশাসনিক কাজ করাতেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, অন্য উপজেলায় নিয়োগপ্রাপ্ত আউটসোর্সিং কর্মীর অন্য হাসপাতালে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়ম ভঙ্গ করেই এই ব্যবস্থা চলছিল বলে জানা যায়। এমনকি ঢাকায় ও বরিশালে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মশালাতেও হাসপাতালের প্রতিনিধিত্ব করতেন মিজান—যা নিয়ম বহির্ভূত।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মিজানের আউটসোর্সিংয়ের চাকরি বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে লালমোহন হাসপাতাল থেকেও বেশ কয়েকজন আউটসোর্সিং কর্মীর চাকরি স্থগিত হয়। এই সুযোগে নুরুজ্জামান নিজ প্রভাব খাটিয়ে মিজানের চাকরি লালমোহনে বহাল রাখেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

হাসপাতালের কয়েকজন নিয়মিত কর্মচারী জানান, একজন আউটসোর্সিং কর্মীকে দিয়ে অফিস সহকারী ও পরিসংখ্যান বিভাগের কাজ করানো হাসপাতালের শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা নষ্ট করেছে। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা ব্যক্তিস্বার্থে মিজানকে ব্যবহার করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান নিজেও স্বীকার করেন যে তার মূল নিয়োগ ছিল তজুমদ্দিন হাসপাতালে। বর্তমানে তিনি লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ের ওয়ার্ডবয় হিসেবে কর্মরত আছেন বলে জানান।

বর্তমান ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহসিন বলেন, “বিষয়টি আগের কর্মকর্তাদের সময়ের। যতদূর জানি, অফিস সহকারী ও কম্পিউটার পরিচালনায় দক্ষ কেউ না থাকায় প্রধান সহকারী নুরুজ্জামান তার আত্মীয় মিজানকে নিয়ে এসেছিলেন।”

বর্তমানে ডা. তৈয়বুর রহমান ও প্রধান সহকারী নুরুজ্জামান—দুজনই ভোলায় বদলি হয়েছেন।